সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

লকডাউনের দিনগুলো - ৩

      


                            ৩১


আজ ৪ নভেম্বর ২০২০ বুধবার

আমার সকাল থেকে জ্বর আর বমিতে

অন্ধকার হয়ে আসছে ঘর,বাড়ি,পথ,ঘাট


                              ৩২


চোখ মুখ সর্বাঙ্গ পুড়ে যাচ্ছে

তোমার কথার সম্মোহন জানে -

এই জ্বরের উত্তাপও হার মেনে যায় তোমার দেওয়া ক্ষতের কাছে


                               ৩৩


জ্বর আজও যায়নি


তুমি কথা বলছ 

                         আমি চুপ আছি


        

  তুমি বলছ, আমি চুপ আছি

  

আর ঠিক এইভাবে আমাদের সম্পর্ক মিশে যাচ্ছে অতলের গভীরে


                 

                                 ৩৪


আজ সকালে কলেজের বই গুলো খুলে দেখি

প্রতিটি পাতায় আমার বাবার বুকে ছোবল মারছে উইপোকা


                                  ৩৫


এই মুহূর্তে "ঘরের বাইরে ঘর" "তুষারকান্তি মাহাতো" বই এর

          "কবিরা শুধুই ক্ষণিকের ভালো লাগা । এদের নিয়ে ভবিষ্যত্ ভাবনা অচল"

                     এই লইনটি পড়ছি আর ভাবছি


হঠাত্ তুষারকান্তি মাহাতোর ফোন, ম্যাজিকেল তাই না


                                   ৩৬


আজ মাইগ্রেনের যন্ত্রণায় মুখ নাক মাথার চুল পর্যন্ত ছিঁড়ে ফেলেছি

এই অসুখ জানে না মস্তিষ্কের শিরায় শিরায় না লেখা অনেক ভাবনার বীজ জমে আছে


                                       ৩৭


মাননীয় প্রধানমন্ত্রী 

                             রোজ রোজ আর এই এক কাজ করতে ভাল্লাগেনা 


                                       ৩৮


হঠাত্ ঘুমিয়ে পড়তেই স্বপ্নে ভেসে আসছে


লম্বা চুল, দাঁড়ি, ছেঁড়া জামা পরা অনেক গুলো লোক.....

আর তাঁর সন্ত্রাসের বুকে চাবুক মেরে ঘুরে বেড়াচ্ছে 


                                        ৩৯


এককেসময় দূরের আকাশ, সবুজ ঘাস, বন্ধ হয়ে যাওয়া কলেজ, কলেজের বন্ধু, রেলপথ, ভিড় কমে যাওয়া বাজর বলে আয় । আয় আমার কাছে আয় 


            

                                      ৪০


বাবা খবরের কাজ পড়ে শোনাচ্ছে এবার পশ্চিমবঙ্গে কোভিডে মৃত্যুর হার দ্রুত হারে বেড়ে চলেছে

তা শুনে মা বলছে আমরা সকলেই দুদিনের টুরিস্ট 


                                   ৪১


ভাই মোবাইলে গেম খেলছে আর তার বন্দুকের নলের ডগায় বসে আছে একটি পাখি

হঠাত্ সেই মুহূর্তে দুজনের মাঝখান থেকে একটি পাখি গান করতে করতে উড়ে গেলো

সে বলছে ভয়ে মরার চেয়ে গান গাওয়া অনেক ভালো


                                        ৪২


গ্রামে অনেকর বাড়িতেই

                                       "নুন আনতে পান্তা ফুরায়" এর মতো অবস্থা


                                        ৪৩


আমার মা তিন বেলা শ্রীলক্ষীর আরাধনা করেন

ধূপধুনো দেয়

আর আমার খালি মনে হয় এই ধোঁয়ার কারণে হয়তো দেবীর চোখ বন্দ হয়ে থাকে সারাক্ষণ


                                        ৪৪


"যে যায় যাক" এই ভেবে আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম

এবং ঘুম থেকে উঠে দেখি কেউ নেই পাশে


                                        ৪৫


এই অসময়ে আবার বুক ভারী হয়ে উঠছে আর তোমার দেওয়া পূর্নরায় ভিজে যাচ্ছি




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চৌষট্টি ছায়া: যোগিনীদের উপাখ্যান

অধ্যায় ১: গন্ধ, গাঁজা, এবং এক ঈশ্বরের জন্ম হিমালয়ের কোলে, এক চিরশান্ত দুপুর। সূর্য যেন ক্লান্ত হয়ে পাহাড়ের ঢালে একটু জিরিয়ে নিচ্ছে। সেই পাহাড়ে, বনের গভীরে, একা এক ঋষিসদৃশ যুবক উঠে বসে পড়েছিল একটি বটগাছে। তাঁর গায়ে ছিল পশুর চামড়া, চুল জটাবদ্ধ, চোখে গভীর নিস্পৃহতা। তাঁর নাম তখন কেউ জানত না। তিনি ছিলেন নামহীন, ঠিকানাহীন, ক্লান্ত এক পথিক। শুধু পৃথিবী নয়, দেবলোকেও তিনি ছিলেন উপেক্ষিত। তিনি সন্ন্যাসী—ভবঘুরে, নির্লিপ্ত। কারও আহ্বানে সাড়া দেন না, কারও নিয়ম মানেন না। কিন্তু সেদিন, কিছু একটার জন্য তিনি নিজেকে নিয়েছিলেন গাছের ডালে তুলে, পাহাড়ের শিখরে—ক্লান্ত, নিঃসঙ্গ, কিছু খুঁজছেন যেন। ঠিক তখনই হাওয়ার দোলায় ভেসে এলো এক অপূর্ব সুঘ্রাণ—কিছুটা ধোঁয়াটে, কিছুটা কাঁচা পাতার মতো, কিছুটা মাটির ভেজা ঘ্রাণের মতো। তিনি চোখ বন্ধ করলেন। ঘ্রাণ তাঁকে কিছু একটা মনে করিয়ে দিচ্ছে—এক ধরনের বিস্মৃতি, যেন সময় থেমে যায় এমন এক মুহূর্তের আমন্ত্রণ। তিনি নামলেন গাছ থেকে, ধীরে ধীরে এগোলেন সুঘ্রাণের উৎসের দিকে। এক পাহাড়ি গুহার চৌকাঠে তিনি দেখতে পেলেন পুড়ে যাওয়া কিছু পাতার স্তূপ। পাতাগুলো ছিল গাঁজা। তিনি কুড়িয়ে নিলেন এক...

কোনও একজনের বিরহে

                                                                                    ১ মনে পড়ার তো কোনও কারণ নেই তবু কথা গুলো                                       ২ কথা গুলো একএকটি বিষের ছোবল, একদা - নীল ময়ূর সোনিলী হরিণ পাখি ও কুকুর-বেড়ালের গায়ে ছুঁড়ে ফেলা হলো সেই ছোবল একএক করে তাঁরা সবাই মারা গেলো                 ...

ঈশ্বর ও প্রেমিকার সংলাপ

– ‘সে যদি তোমাকে ভালোবেসে অশান্তি'তে মারে?’ ভাগ্য দোষে মরে যাবো তবে — ‘সে যদি তোমাকে রোজ করে অপমান?’ শোকেতে, আমি শোকেতে খানখান — ‘সে যদি তোমাকে রোজ করে গালাবালি?’ বাথরুমে বসে বসে কেঁদে নেবো খালি — ‘কাঁদবে?– আচ্ছা, ঠক ঠক করে ওঠে যদি বাথরুমের দরজার?’ মুছতে মুছতে জল ধুয়ে নেবো চোখের পাতা — ‘যদি পাতা জুড়ে ব্লক রাখে সোশ্যাল মিডিয়া তোকে?’ কী আর করব? কবিতায় লিখব ওকেই বলো কী বলব, আদালত, কিছু বলবে কি এরপরও? — ‘যাও, আজীবন তুমি আশীষের, আর আশীষ তোমার অভাব ভোগ করো!’